মানুষের বুদ্ধি ও কম্পিউটার । বাংলা রচনা(Bangla Rochona) |
ভূমিকা ঃ
বিজ্ঞানের কল্যাণের অবদানে মানুষের জীবন সুখসম্পন্ন ও আরামপ্রদ। হয়ে উঠেছে। যন্ত্রশক্তিই একালে সভ্যতা বিকাশের প্রধান শক্তির উৎস। কিন্তু মানুষের সেই হিতাথী বিজ্ঞানই মানুষের প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী ও শত্রু হয়ে উঠেছে। সভ্য মানুষ যন্ত নির্ভর হয়ে পড়ায় মানুষের জীবনে যন্ত্রশক্তি বয়ে এনেছে নিদারুণ অভিশাপ—অমঙ্গল ও দারিদ্রের প্রবল ভীতি।
যন্ত্রের দাসত্ব ঃ
শতশত মানুষের হাত যে কাজ করতে পারে না, একালে যন্ত্র তা একাই করে ফেলেছে। যন্ত্র ক্রমশঃ দানবে পরিণত হয়েছে। কম্পিউটার এখানে লক্ষ্য কোটি মানুষের নিয়ামক এবং নিগ্রহকারী। ধনীশ্রেণী যন্ত্রের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ-উৎপাদন বৃদ্ধি করে চলেছে, তার ফলে বহু মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে।
কম্পিউটারের উপযােগিতাঃ
কম্পিউটার তথ্যকে পরিবেশন করে। সুপার কম্পিউটার তৈরি নিয়ে তীব্র প্রতিযােগিতা চলেছে। আন্তর্জাতিক যুদ্ধের ক্ষেত্রে এটি অপ্রতিরােধ্য প্রয়ােজনে আসতে পারে। কিন্তু ভারতের মত দরিদ্র, অনুন্নত, বেকার সমস্যা পীড়িত দেশে স্বয়ংক্রিয় এই যন্ত্রের ব্যবহার চরম অভিশাপ বহন করে আনছে। ভারতের মত দরিদ্র দেশে কম্পিউটার চলতে পারে যদি ভারত অর্থনীতিতে স্বনির্ভর হতে পারে।
কম্পিউটারের প্রয়ােগঃ
যন্ত্রশক্তির দ্বারা মানুষের কল্যাণ বা অকল্যাণ সাধনের সমস্ত দায়-দায়িত্ব যন্ত্র ব্যবহারকারীর। এজন্য যন্ত্রশক্তিকে দায়ী করে লাভ নেই। | কম্পিউটারকে ‘সবজান্তা যন্ত্র বলতে পারি। আবার সে মানুষের পরম হিতৈষী সহায়ক। বিজ্ঞানের কল্যাণ রূপ মানুষের সামনে তুলে ধরেছে এই কম্পিউটার। উন্নত দেশগুলাে এই স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রটিকে কৃষি, শিল্প, স্বাস্থ্য প্রভৃতি ক্ষেত্রে ব্যবহার করে বিস্ময়কর ফল পাচ্ছে। অফিস-আদালত ও শিক্ষার ক্ষেত্রেও এই যন্ত্রটি প্রয়ােগ করা হচ্ছে। দেশের প্রগতির ক্ষেত্রে এটি যুগান্তর এনেছে। কম্পিউটারকে মানুষ বিভিন্ন কাজে লাগিয়েছে। কম্পিউটারের বিশেষ রূপ রােবট সমুদ্রের ছয় হাজার ফুট নীচে বিমানের ‘ব্ল্যাকবক্স’ তুলে আনতে সক্ষম হয়েছে। রােবটকে পরিচালনা করে কম্পিউটার।
উপসংহারঃ
শ্রম, সময় ও বুদ্ধির নিরিখে বিচার করলে কম্পিউটার ব্যক্তি জীবনে, সমষ্টি জীবনে ও জাতীয় জীবনে অত্যাবশ্যকীয়। ভারতে উন্নয়নমূলক কাজকে গতিশীল ও দেশকে প্রগতির পথে চালিত করতে কম্পিউটারকে স্বাগত জানাতে হবে।